আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি এবং ফজিলত

আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি বা আস্তাগফিরুল্লা পাঠ করার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক আস্তাগফিরুল্লাহ মানে কি এবং এর ফজিলত।

আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি
আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি

আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি

আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ হচ্ছে আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি। মানুষ ভুলের উর্ধে নয়। আল্লাহ সেই বান্দাকে পছন্দ করেন যে ভুল করার পর তার সর্নিধ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুন্দর উপায় হলো ইস্তিগফার পাঠ করা। আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করে আল্লাহর কাছে আপনি ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন।

আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি | ইস্তিগফার

উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লাহ।

অর্থঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।

অর্থঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।

উচ্চারণঃ রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।

অর্থঃ হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।

উচ্চারণঃ আস্‌তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।

অর্থঃ আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউলাকা বিজাম্বি ফাগ্ফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।

অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই বান্দা আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নেয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গোনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।

আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করার ফজিলত

নবী করিম (সা.) সালাম ফেরানোর পরে তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়তেন। এর মধ্যে দোয়ার অর্থ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নবী করিম (সা.) ৭০ বারেরও বেশি আস্তাগফিরুল্লাহ জিকিরের মধ্যে বলতেন। এর মধ্যে আল্লাহর মুখাপেক্ষীর বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ বার তওবা ও ইস্তিগফার করতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দুয়া পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতি হবে’।

আরো জানুনঃ ফি আমানিল্লাহ অর্থ কি এবং কখন বলতে হয়

১. অধিক ইস্তিগফারের কারণে প্রচুর বর্ষণ হয়। বাগান ও শস্যে ভালো ফসল হয়। নদী-নালা থাকে জীবন্ত।
২. ইস্তিগফারকারীকে আল্লাহ উত্তম সন্তান, সম্পদ ও জীবিকার দ্বারা সম্মানিত করেন।
৩. দীন পালন সহজ হয়। এবং কর্মজীবন হয় সুখের।
৪. আল্লাহ ও বান্দার মাঝে যে দূরত্ব আছে, তা ঘুচে যায়।
৫. ইস্তিগফারকারীর কাছে দুনইয়াকে খুব তুচ্ছ করে দেয়া হয়।
৬. মানব ও জীন শয়তান থেকে তাকে হিফাযত করা হয়।
৭. দীন ও ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করা যায়।
৮. আল্লাহর ভালোবাসা অর্জিত হয়।
৯. বিচক্ষণতা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
১০. দুশ্চিন্তা, পেরেশানি দূর হয়।
১১. বেকারত্ব দূর হয়।
১২. আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য অর্জিত হয়। তার তাওবার কারণে আল্লাহ আনন্দিত হন।
১৩. মৃত্যুর সময় ফেরেস্তারা তার জন্য সুসংবাদ নিয়ে আসে।
১৪. হাশরের মাঠে মানুষ যখন প্রচন্ড গরম ও ঘামের মধ্যে থাকবে, তখন ইস্তিগফারকারী থাকবে আরশের ছায়াতলে।
১৫. কিয়ামাতের দিন মানুষ যখন অস্থির থাকবে, ইস্তিগফারকারী তখন ডানপন্থী মুত্তাকিনদের দলে থাকবে।
১৬. মন্দ কজ থেকে বেঁচে থাকা যায়।
১৭. আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণও তার জন্য দু’আ করেন।

আশা করি আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি এবং ইস্তিগফার এর ফজিলত সম্পর্কে জেনে গেছেন। সুন্দর জীবন গড়তে আল্লাহর কাছে নিজেকে সপে দিন। ক্ষমা প্রার্থনা করুন মহান সৃষ্টিকর্তার যিনি আপনাকে জীবন দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *